১৯ ঘণ্টা পর কাইয়ুম সর্দার (৩৫) নামের এক হ্যান্ডলিং শ্রমিকের লাশ উদ্ধার করেছে ফায়ার
সার্ভিসের ডুবুরিরা। রবিবার অভয়নগরে কার্গো জাহাজ থেকে পণ্য নামানোর সময় পানিতে পড়ে
নিখোঁজ হন তিনি। সোমবার দুপুরে তার লাশ উদ্ধার করে ডুবুরিরা।
কাইয়ুম সর্দার উপজেলার শুভরাড়া ইউনিয়নের শুভরাড়া গ্রামের মো. শরিয়াতুলাহর ছেলে। কাইয়ুমের
স্ত্রী এবং এক ছেলে ও এক মেয়ে সন্তান রয়েছে।
অভয়নগর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) দেলোয়ার বলেন, নিখোঁজ কাইয়ুম অসাবধানতাবশত
সারের বস্তা নিয়ে পানিতে পড়ে যান। খুলনা বিভাগীয় ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিরা তার লাশ উদ্ধার
করেছে। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, রবিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে উপজেলার মহাকাল মিস্ত্রিপাড়া সংলগ্ন মেসার্স দেশ
ট্রেডিংয়ের ২ নম্বর ঘাটে কাইয়ুম হ্যান্ডলিং শ্রমিক হিসেবে কাজ করছিলেন। সারের বস্তাসহ পা পিছলে
ভৈরব নদীতে পড়ে যান তিনি। স্থানীয় শ্রমিকদের সহায়তায় সোমবার দুপুরে ২টার দিকে তাঁর লাশ
উদ্ধার করে ডুবুরিরা।
কাইয়ুমের শ্যালক ইয়াছিন মোলা বলেন, এমভি তিশান নামের একটি কার্গো থেকে টিএসপি সারের
বস্তা আনলোডের কাজ করছিলাম। আমি কাইয়ুম ভাইয়ের পাশে ছিলাম। আমার মাথায়ও বস্তা ছিল।
আমিও হ্যান্ডলিং শ্রমিক হিসেবে কাজ করি। এমন সময় কাইয়ুম ভাই মাথায় বস্তাসহ পানিতে পড়ে
যান। আমি ধরতে গিয়েও ব্যর্থ হই। তাৎক্ষণিক উপস্থিত অন্য শ্রমিকেরা তাকে খোঁজার চেষ্টা করেন।
কিন্তু সেই থেকে তাকে খোঁজ করার চেষ্টা করেও পাওয়া সম্ভব হয়নি। ১৯ ঘণ্টা পর তার লাশ পাওয়া
গেছে। দেশ ট্রেডিংয়ের পক্ষ থেকে কোনো সহায়তা করা হয়নি।
কয়েকজন শ্রমিক বলেন, দেশ ট্রেডিং অনেক বড় একটা কো¤পানি। কিন্তু তাদের ঘাট লেবার পানিতে
পড়ে নিখোঁজ হওয়ার সংবাদ পেলেও তাদের পক্ষ থেকে কোনো উদ্ধার তৎপরতা দেখা যায়নি। যেটা
খুবই দুঃখজনক।
নিহতের স্বজনরা জানান, কাইয়ুমের পরিবার খুবই হতদরিদ্র। তার মা-বাবা কেউ বেঁচে নেই। স্ত্রীসহ
এক ছেলে ও একটি মেয়ে রয়েছে। তাই দেশ ট্রেডিংয়ের পক্ষ থেকে বড়ধরনের আর্থিক সহায়তার
দাবি করেন স্বজনরা।
এ বিষয়ে বক্তব্য নেওয়ার জন্য দেশ ট্রেডিংয়ের অফিসে গিয়ে অফিস বন্ধ পাওয়া যায়।
অভয়নগর নওয়াপাড়া হ্যান্ডলিং শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ফালগুন মণ্ডল বলেন, মাথায় বস্তাসহ
কাইয়ুম নদীতে পড়ে যান। ১৯ ঘণ্টা পর তার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।