২২ ফেব্রæয়ারি পোস্তগোলা সেতুর (বুড়িগঙ্গা-১) সংস্কার কাজ শুরু হবে, যা চলবে ৮ মার্চ পর্যন্ত। সংস্কার কাজ চলার সময় ঢাকাসহ ২১টি জেলার মানুষের যাতায়াতের ক্ষেত্রে বাড়তি যানজটের আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। বিষয়টি মাথায় রেখে ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগসহ সাতটি সংশ্লিষ্ট সংস্থার প্রতিনিধিরা বৈঠক করেছেন। বাড়তি যানজট মোকাবিলায় ও বিকল্প সড়ক নির্ধারণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সংস্কার কাজ চলার সময় সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তি অনুসরণ করা হবে। গতকাল রবিবার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ সদর দপ্তরে (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
এ ব্যাপারে ডিএমপির বিভাগের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. মুনিবুর রহমান বলেন, সেতুর সংস্কার কাজ চলার সময় ঢাকা মহানগরীর বাইরে থেকে ভারী যানবাহনগুলো কোন পথে আসবে সম্ভাব্য কোন রুট দিয়ে আসতে- যেতে পারে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে আমরা বৈঠক করেছি। এ বিষয়ে একটি গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়েছে। ডিএমপি কীভাবে কাজ করতে পারে ডিএমপিকে অন্যান্য অংশীদার কীভাবে সহযোগিতা করতে পারে তা আলোচনা করা হয়েছে বৈঠকে। গণবিজ্ঞপ্তিতে সম্ভাব্য রুটগুলোকে দুই ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়েছে। একটি হচ্ছে ভারী যানবাহন আরেকটি হালকা যানবাহন। এছাড়া বিকল্প যেসব রুট আছে সেগুলো নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে জানান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. মুনিবুর রহমান।
তিনি বলেন, বিজ্ঞপ্তিতে যে রুটগুলোর কথা বলা হয়েছে সেগুলোতে কোনো ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হলে বিকল্প কী রুট রয়েছে সে বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
বৈঠকে কী সিদ্ধান্ত হয়েছে এবং পোস্তগোলা ব্রিজের বিকল্প কী রুট নির্ধারণ করা হয়েছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যেহেতু একটি গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়েছে এবং যে দুটি ক্যাটাগরি করা হয়েছে- হালকা যানবাহন এবং ভারী যানবাহন, সেই বিষয়ে আমরা আলোচনা করেছি।
বৈঠকে সংশ্লিষ্ট সাতটি সংস্থা অংশগ্রহণ করেছে জানিয়ে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বলেন, বাবুবাজারকেন্দ্রিক ভারী যানবাহন চলাচলের রুটের বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এসএসসি পরীক্ষাসহ বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানের কথা বিবেচনায় রেখে গণবিজ্ঞপ্তির রুটগুলো আমরা অনুসরণ করার চেষ্টা করব। এছাড়া বিকল্প রুটগুলো মাথায় আছে।
সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পোস্তগোলা সেতুর (বুড়িগঙ্গা সেতু-১) সংস্কার কাজ ২২ ফেব্রæয়ারি থেকে ৮ মার্চ চলমান থাকবে। এ অবস্থায় সাময়িকভাবে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় ঐ সড়কে চলাচলকারী যানবাহনের বিকল্প সড়ক ব্যবহারের সাধারণ নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে। বরিশাল বিভাগের ৬ জেলা (বরিশাল, ভোলা, বরগুনা, ঝালকাঠি, পটুয়াখালী, পিরোজপুর), খুলনা বিভাগের ১০ জেলা (খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, যশোর, কুষ্টিয়া, নড়াইল, মাগুরা, ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর) ও বৃহত্তর ফরিদপুর অংশের ৫ জেলা (ফরিদপুর, শরীয়তপুর, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, রাজবাড়ী) থেকে দেশের অন্যত্র যানবাহন চলাচলের ক্ষেত্রে ২২ ফেব্রæযারি থেকে সাধারণ নির্দেশিকা মেনে চলার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
নির্দেশিকা গুলো হলো ঃ ঢাকা মহানগরীতে যানবাহন প্রবেশ ও বের হওয়ার ক্ষেত্রে দৌলতদিয়া, পাটুরিয়া, নবীনগর, আমিনবাজার, গাবতলী- এই রুট অনুসরণ করতে হবে। সায়েদাবাদের পরিবর্তে গাবতলীতে যাত্রীবাহী বাস থামবে। ঢাকা বিভাগের অন্যান্য জেলায় (ঢাকা আংশিক, মানিকগঞ্জ, গাজীপুর, নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, টাঙ্গাইলের (আংশিক) যানবাহন যাতায়াতের জন্য দৌলতদিয়া ও পাটুরিয়া, নবীনগর, বাইপাইল, চন্দ্রা, ভোগড়া, চৌরান্তা হয়ে এশিয়ান হাইওয়ে ব্যবহার করে যাতায়াত করতে বলা হয়েছে। রাজশাহী, রংপুর বিভাগমুখী যানবাহনগুলোকে লালনশাহ সেতু (কুষ্টিয়া, পাবনা) ব্যবহার করে যাতায়াত করতে হবে। ময়মনসিংহ বিভাগ ও টাঙ্গাইল জেলার (আংশিক) যাতায়াতের ক্ষেত্রে লালনশাহ সেতু (কুষ্টিয়া, পাবনা) ও বঙ্গবন্ধু সেতু ব্যবহার করতে বলা হয়েছে। সিলেট বিভাগ ও ব্রাহ্মন বাড়িয়া জেলার যানবাহন যাতায়াতের জন্য দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নবীনগর, বাইপাইল, চন্দ্রা, ভোগড়া চৌরাস্তা হয়ে এশিয়ান হাইওয়ে ব্যবহার করতে বলা হয়েছ। চট্টগ্রাম বিভাগের নির্দেশনায় বলা হয়, পদ্মা সেতু হয়ে শ্রীনগর মুন্সীগঞ্জ, মুক্তারপুর সেতু, তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতু, মদনপুর দিয়ে অথবা শরীয়তপুর-চাঁদপুর ফেরি ব্যবহার করে যাতায়াত করতে হবে।