spot_img

বিকাশ প্রতারকের ফাঁদে নায়িকা দীঘি

চিত্রনায়িকা প্রার্থনা ফারদিন দীঘির মুঠোফোনে একটি কল ভেসে ওঠে। কলটি ধরার পর তাকে জানানো হয়, বিকাশ অফিস থেকে বলছি। আপনার বিকাশে ভুলে ২৫ হাজার টাকা চলে গেছে। আপনার অ্যাকাউন্টটি বøক করে দেয়া হয়েছে। অ্যাকাউন্টটি চালু করতে হলে আপনার নম্বরে একটি ওটিপি কোড পাঠানো হবে। সেটি আপনি বললে আপনার অ্যাকাউন্টটি ঠিক করে দেয়া হবে। কথিত ওই বিকাশ কর্মকর্তার প্রতারণার ফাঁদে নিজের বিকাশ অ্যাকাউন্ট থেকে দেড় লাখেরও বেশি টাকা খুইয়েছেন দীঘি। খোয়া যাওয়া টাকা উদ্ধার করে ফিরিয়ে দিয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।


সোমবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ে গিয়ে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদের হাত থেকে উদ্ধার হওয়া টাকা বুঝে নেন অভিনয়শিল্পী দিঘী। এসময় নায়িকার সঙ্গে ছিলেন তার বাবা অভিনেতা সুব্রত বড়ুয়া এবং মামা ভিক্টর। অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদ বলেন, গত শনিবার দীঘির মোবাইল ফোনে একটি অপরিচিত নম্বর থেকে কল আসে। ওই ব্যক্তি নিজেকে বিকাশ অফিসের কর্মকর্তা দাবি করেন। বিকাশ অ্যাকাউন্ট বøক হওয়ার তথ্য জানিয়ে ঠিক করে দেয়ার নামে দীঘির কাছে একটি ওটিপি নম্বর চাইলে সরল মনে সেটা দিয়ে দেন অভিনেত্রী।
এর কিছুক্ষণ পরই বিকাশ অ্যাকাউন্টের ব্যালান্স চেক করলে দীঘি দেখতে পান, তার অ্যাকাউন্ট থেকে এক লাখ ৬২ হাজার টাকা উধাও। পরে তিনি শেরেবাংলা নগর থানা ও ডিবিতে অভিযোগ করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে রাজধানীর মিরপুর এলাকা থেকে দুই প্রতারককে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা হলেন- মো. পলাশ জোমাদ্দার ও জুয়েল হোসেন। উদ্ধার হয় হাতিয়ে নেয়া টাকা। ডিবিপ্রধান বলেন, একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্যরা ব্যক্তির অজান্তে ভুয়া রেজিস্ট্রেশন করা সিম ব্যবহার করে। সিমগুলো দিয়ে বিকাশ বা নগদ কাস্টমার কেয়ারের প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন পরিচয় দিয়ে কৌশলে টার্গেট করা ব্যক্তিকে ফোনকল করে তার বিশ্বাস অর্জন করে। এরপর বিভিন্ন কথা বলার পর অবৈধভাবে টার্গেট ব্যক্তির বিকাশ নম্বরে লগইন করার জন্য তার নম্বরে ওটিপি পাঠিয়ে দেয় এবং টার্গেট ব্যক্তিকে তার মোবাইলে যাওয়া ওটিপি বলার জন্য অনুরোধ করে। নায়িকা দীঘি সরল বিশ্বাসে এবং তার বিকাশ অ্যাকাউন্ট সচল করা বা অন্য কোনো আশায় তার মোবাইলে আসা ওটিপি বলে দেয়।
এরপর প্রতারক চক্র দীঘির অ্যাকাউন্টে লগইন করে ভুয়া নামে বিকাশ রেজিস্ট্রেশন করা নম্বর দিয়ে টাকা তুলে নেয়। পরবর্তী সময়ে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ওই টাকা নগদ উত্তোলন করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ফাঁকি দেয়ার চেষ্টা করে। এভাবে দেশের অসংখ্য সাধারণ মানুষ এসব চক্রের প্রতারণার শিকার হচ্ছে বলেও জানান ডিবিপ্রধান। এ ঘটনার সঙ্গে গ্রেপ্তার আসামিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে তদন্ত সংশ্লিষ্টরা।

প্রতারকদের খপ্পড়ে পড়ার বিষয়ে চিত্রনায়িকা দীঘি বলেন ‘আমার বিকাশ অ্যাকাউন্টে এক লাখ ৬০ হাজার টাকা ছিল। আমি কোনো কিছু বুঝতে না পেরে দ্রæত কোডটি তাদের দিয়ে দিই। কারণ, অ্যাকাউন্ট তো ঠিক করতে হবে। পরক্ষণেই আমার অ্যাকাউন্টে থাকা সব টাকা সরিয়ে নেয়া হয়। সাধারণত যে নম্বর থেকে বিকাশের মেসেজ আসে, সেখান থেকেই ওটিপি আসে। বোঝার সুযোগ কম ছিল। আর তিনি এতো ভালোভাবে কথা বললেন, আমি বুঝতেই পারিনি উনি প্রতারক। এ ঘটনাটি ঘটে গত শনিবার।
‘ঘটনার পর শেরেবাংলা নগর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করি। তারপর আমি অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদকে বিষয়টি জানাই। তিনি আমার কাছে থাকা সব ডকুমেন্ট নিয়ে যেতে বলেন ডিবিতে। রবিবার সকালে আমি আর আমার বাবা (সুব্রত) তার কাছে যাই। সব ঘটনা খুলে বলি। ওই দিন রাতেই তিনি (হারুন) আমাকে কল দেন। গতকাল সকালে আবার ডিবি অফিসে যেতে বলেন। আমি আর বাবা যাই। পরে আমাকে ওই টাকা ফেরত দেন। এ ছাড়া অপরাধীকে আটক করেছেন বলে জানিয়েছেন।


প্রসঙ্গত, প্রয়াত নায়িকা দোয়েল ও অভিনেতা সুব্রতর মেয়ে দিঘী। চলচ্চিত্রে শিশুশিল্পী হিসেবে পরিচিতি পেয়েছিলেন। জিতেছিলেন তিনটি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নিজেকে চিত্রনায়িকা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন দীঘি।

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Stay Connected

0FansLike
0FollowersFollow
22,100SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

সর্বশেষ সংবাদ