spot_img

‘ডায়মন্ড’ ও ‘দে’ ধাক্কা কিশোর গ্যাং পাঁচ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব

রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে দুইটি কিশোর গ্যাংয়ের ৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। গ্রেফতারকৃতরা হলেন, জুলফিকার আলী, তার সহযোগী হারুন অর রশিদ, শামছুদ্দিন বেপারী, কৃষ্ণ চন্দ্র দাস ও সুরুজ মিয়া। গতকাল শনিবার দুপুরে রাজধানীর টিকাটুলির র‌্যাব-৩ কার্যালয়ে এই ৫ জন গ্রেপ্তারের বিষয়ে এক সংবাদ সম্মেলন করে র‌্যাব। র‌্যাব সূত্র জানায়, গত শুক্রবার রাতে তাদেরকে আটক করা হয়। আটককৃতরা ডায়মন্ড ও দে ধাক্কা কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য। পেশায় কেউ রাজমিস্ত্রী, কেউ চা-বিক্রেতা কিংবা প্রাইভেটকার চালক। মাদক সেবনের আড্ডার মাধ্যমে সখ্যতা গড়ে উঠে তাদের। তারা দৃশ্যমান পেশার আড়ালে মূলত কিশোর গ্যাং পরিচালনা করতো। এ চক্রের অন্যতম হোতা জুলফিকার আলী।


সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাব-৩ এর কমান্ডিং অফিসার (সিও) লে. কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, রাজধানীর মোহাম্মদপুর জুড়ে গ্রেপ্তার জুলফিকার ও তার সহযোগিদের ছত্রছায়ায় গড়ে ওঠে ডায়মন্ড ও দে ধাক্কা নামের দুটি কিশোর গ্যাং। নিজেদের আধিপত্য জানান দিতে গ্যাং দুটির সদস্যরা দেশিয় অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিতো। তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন সময় প্রতিপক্ষ কিশোর গ্যাং সদস্যদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়তো। জুলফিকারের কিশোর গ্যাং চালানোর জন্য হারুন, শামছুদ্দিন বেপারী, কৃষ্ণ চন্দ্র দাস ও সুরুজ মিয়া সহযোগী হিসেবে কাজ করতো। জুলফিকার মূলত ডায়মন্ড ও ধাক্কা দে গ্রæপের সদস্যদের দেশি-বিদেশি অস্ত্র সরবরাহ করতো। দুটি কিশোর গ্যাং চক্রের সদস্যরা এলাকায় নিয়মিত মোটরসাইকেল ব্যবহার করে ছিনতাই, মাদক, ভ‚মি দখল ও চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধ করতো। এছাড়াও কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা নিজেদেরকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য পরিচয় দিয়ে পথচারীদের মাদক দিয়ে ফাঁসিয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করতো। অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ঠিকাদারের কাজও আটকে দিতো তারা।
লে. কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন বলেন, জুলফিকার অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করে। পরবর্তী সময়ে পড়াশোনা ছেড়ে একটি ওয়ার্কশপে কাজ শুরু করে। কিছুদিন পর তা ছেড়ে নারায়ণগঞ্জে পিকআপে হেলপারের কাজ শুরু করে। এ অবস্থায় মালামাল চুরির দায়ে নারায়ণগঞ্জ জেলার রুপগঞ্জ থানায় তার নামে মামলা হলে পালিয়ে সৌদি চলে যায়। গত ২০২১ সালে দেশে আসার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হয়ে ২ মাস জেল খেটে জামিনে বের হয় সে। জেলে বসে হারুনের সঙ্গে জুলফিকারের সখ্যতা গড়ে উঠে।
তিনি আরো বলেন, জুলফিকার জামিনে মুক্ত হয়ে হারুনকে নিয়ে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে টিউবওয়েলের মিস্ত্রী হিসেবে কাজ করতে শুরু করেন। এ সময়ে মোহাম্মদপুর এলাকায় মাদক সেবনের আড্ডার মাধ্যমে কৃষ্ণ, শামছুদ্দিন ও সুরুজসহ বেশ কয়েকজনের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়। তাদের সঙ্গে পরামর্শ করে ২০২২ সালে জুলফিকার ডায়মন্ড নামের কিশোর গ্যাং তৈরি করে বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যক্রমের জন্য দিক নির্দেশনা দেয়াসহ অস্ত্র সরবরাহ শুরু করে। পরবর্তীতে আরো একটি কিশোর গ্যাং তৈরি করে যার নাম দেয় ‘দে ধাক্কা’। কিশোর গ্যাং বাহিনী দুটিকে দিকনির্দেশনা দিয়ে মোহাম্মদপুর এলাকায় সে বিভিন্ন অপকর্ম করতে থাকে। হারুন ২০২১ সালে আদাবর থানার একটি চাঁদাবাজি মামলায় গ্রেপ্তার হয়, পরে জামিনে এসে জুলফিকার সঙ্গে কিশোর গ্যাং পরিচালনা করতে শুরু করে। এছাড়াও গ্রেপ্তার শামছুদ্দিন বেপারী পেশায় একজন রাজমিস্ত্রী, কৃষ্ণ চন্দ্র দাস পেশায় চা-বিক্রেতা ও সুরুজ মিয়া একজন প্রাইভেটকার চালক। তারা সবাই মোহাম্মদপুরের মোহাম্মদিয়া হাউজিং সোসাইটি এলাকায় বসবাস করে। এলাকায় মাদক সেবনের আড্ডার মাধ্যমেই মূলত তাদের মধ্যে সখ্যতা গড়ে উঠে।

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Stay Connected

0FansLike
0FollowersFollow
22,100SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

সর্বশেষ সংবাদ