spot_img

৫ম শ্রেণি ফেল আনোয়ার ‘ওসি’

আমীর মুহাম্মদ জুয়েল
গাইবান্ধা সদর থানার স্টেশন রোড এলাকার ইসলাম প্রিন্টিং প্রেস নামে একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন (৩০)। তার প্রাতিষ্ঠানিক কোনো শিক্ষা নেই। ৫ম শ্রেণিতে ফেল করার পর আর পড়াশোনা চালিয়ে যাননি। স্থানীয়দের কাছে সামাজিক যোগাযোগ ফেসবুকসহ অনলাইনের বিভিন্ন সমস্যা সমাধান করে ফেসবুক ‘মাস্টার’ উপাধি পেয়েছেন আনোয়ার। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের তেজগাঁও থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন সেজে ৭৭১ জন নারীর সঙ্গে চ্যাট করেন। পরে তেজগাঁও থানার সাইবার নিরাপত্তা আইনের মামলায় শুক্রবার ইসলাম প্রিন্টিং প্রেস থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
শনিবার ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার (ক্রাইম) লিটন কুমার সাহা বলেন, র্দীঘদিন ধরে তেজগাঁও থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীনের নামে একটি ভুয়া ফেসবুক আইডি চালিয়ে আসছিলো আনোয়ার। মহসীন সেজে বিভিন্ন মেয়ের সঙ্গে চ্যাট করতো। তার অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন ব্যক্তি, মন্ত্রী, পুলিশ কর্মকর্তা, জনপ্রিয় ব্যক্তিদের ছবি ব্যবহার করে হুবহু নামে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খুলতেন। এরপর নারীদের টার্গেট করে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতেন। ধীরে ধীরে তাদের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে টাকা পয়সা হাতিয়ে নিতেন।
ডিএমপির এ যুগ্ম কমিশনার আরও বলেন, আনোয়ারকে গ্রেপ্তারের পর তার কম্পিউটার ও মোবাইলে রাষ্ট্রপতি বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, চাঁদপুর জেলার সদর উপজেলার ১০ নং ল²ীপুর মডেল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সেলিম খান, তেজগাঁও থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন, চিত্রনায়ক শান্ত খান, অভিনেতা ও মডেল সজল, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নামে ফেসবুকের আইডি পাওয়া যায়। এর মধ্যে কয়েকটি আইডি ডিজঅ্যাবল পেলেও বাকিগুলো সচল অবস্থায় ছিল।
তিনি বলেন, ৫ম শ্রেণিতে ফেল করলেও মেয়েদের সঙ্গে চ্যাটিংয়ে পটু আনোয়ার। তিনি কখনও ওসি সেজে, কখনও নায়ক সেজে, কখনও বা জনপ্রতিনিধি সেজে চ্যাট করতেন। ভুয়া আইডি খুলে এ পর্যন্ত তিনি ৭ শতাধিক নারীর সঙ্গে কথা বলছেন। শিক্ষার্থী, গৃহিণী, প্রবাসী, মডেল সবাই আছেন তার এ তালিকায়। ম্যাসেঞ্জারে কথা বলার পরে হোয়াটসঅ্যাপেও তাদের সঙ্গে কথা বলেন। কথা বললেও কারও সঙ্গে ভিডিও কলে আসতেন না তিনি। আবার কেউ তাকে দেখতে চাইলে কিংবা সন্দেহ করলে সাথে সাথেই তাকে বøক করে দিতেন। তিনি মূলত মেয়েদের সঙ্গে আপত্তিকর কথাবার্তা বলতেন। তাদের মধ্যে কারও কারও সঙ্গে ছবিও আদান প্রদান করেছেন। আবার কারও কাছে টাকাও দাবি করেছেন।
তেজগাঁও থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন বলেন, তার নামে ফেসবুক আইডি ও হোয়াটসঅ্যাপে ৭৭১ জন নারীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ও আপত্তিকর ছবি আদান প্রদানের ঘটনায় বেশ কয়েকজন ভ‚ক্তভোগী থানায় অভিযোগ করেন। আনোয়ারের এলাকায় কোনো ব্যক্তির আইডি, পাসওয়ার্ড হারিয়ে গেলে তার উদ্ধারসহ ফেসবুকের যেকোনো সমস্যা সহজে সমাধান করে দিতো। ইউটিউব দেখে এসব শেখেন তিনি। এ ঘটনায় বিব্রত হয়ে তিনি বাদী হয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা করেন। সেই মামলায় তেজগাঁও থানা পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে।

Related Articles

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Stay Connected

0FansLike
0FollowersFollow
22,100SubscribersSubscribe
- Advertisement -spot_img

সর্বশেষ সংবাদ